গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে নিখোঁজের ২৪ ঘণ্টা পর নুর হাওয়া নামে তিন মাসের এক কন্যাশিশুর লাশ বাড়ির টয়লেটের ভেতর থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। শিশুটিকে জীবন্ত অবস্থায় টয়লেটের ভেতরে ফেলে হত্যা করেন পাষণ্ড মা। এ ঘটনায় হত্যার দায় স্বীকার করায় নিহতের মা তানজিলা বেগমকে (৩৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
রবিবার (৩১ জানুয়ারি) বিকেলে পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ধুমাইটারী (জকরীপাড়া) এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এতে আটক তানজিলা পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বাড়ির টয়লেটের ভেতর থেকে ওই শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তার তানজিলা বেগম ওই গ্রামের নুরুল ইসলামের স্ত্রী।
স্থানীয়রা জানান, গতকাল শনিবার বিকেলে ঘরের ভেতর থেকে নিখোঁজ হয় নুর হাওয়া নামের শিশুটি। আশপাশে ও প্রতিবেশীর বাড়িতে সবাই খোঁজ করেও সন্ধান মেলেনি। এরপর শিশুটিকে না পেয়ে রাতেই থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন শিশুটির বাবা নুরুল ইসলাম। নিখোঁজ শিশুর সন্ধান না পেয়ে আহাজারি ও কান্নায় ভেঙে পড়েন তার বাবা ও পরিবারের লোকজন। কিন্তু শিশুটির মায়ের নীরব ভূমিকা ও আচরণে সন্দেহ হয় সবার। পরে পরিবার ও স্থানীয়রা শিশুটির মা তানজিলা বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদ ও চাপ প্রয়োগ করলে টয়লেটে ফেলে হত্যার কথা স্বীকার করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে বাড়ির টয়লেটের ভেতর থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করে। এতে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার দায় স্বীকার করায় শিশুটির মাকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যান। তবে, কি কারণে শিশুটিকে জীবন্ত অবস্থায় টয়লেটে ফেলে হত্যা করা হয়েছে তা জানায়নি। কিন্তু মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে শিশুটিকে হত্যা করেছেন বলে স্বীকার করেছে অভিযুক্ত শিশুর মা।
প্রতিবেশীরা বলছে, ওই নারী কখনো মানসিক ভারসাম্যহীন ছিল না। তিনি সুস্থ ও স্বাভাবিক আছেন। পারিবারিক কলহে অশান্তির কারণে স্বামীর সংসার না করতেই শিশুটিকে হত্যা করেন। যাতে এই শিশুটি তার কাছে বোঝা না হয়। এর আগেও ওই নারীর একাধিক বিয়ে হয়েছিল। তার আগের স্বামীর একটি ছয় বছরের কন্যাসন্তান আছে। সে ওই নারীর সাথে এখানেই থাকেন বলে জানা গেছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহিল জামান বলেন, নিখোঁজ শিশুটির মাকে জিজ্ঞাসাবাদে দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বাড়ির টয়লেটের ভেতর থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় হত্যার দায় স্বীকার করায় নিহতের মা তানজিলা বেগমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলা দায়ের প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান ওসি।
Leave a Reply