কুমিল্লার দাউদকান্দির ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক থেকে গাছ সরানোর কাজ করছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
কুমিল্লার দাউদকান্দির ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক থেকে গাছ সরানোর কাজ করছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার হেসাখাল বাজার ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডে ঘরের ওপর গাছ পড়ে একই পরিবারে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রায়হান মেহেবুব এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নিহতরা হলেন—নেজাম উদ্দিন, তাঁর স্ত্রী শারমিন আক্তার সাথি ও তাঁদের দুই বছরের শিশু নুসরাত।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে সৃষ্ট ঝোড়ো বাতাসে কুমিল্লার বিভিন্ন এলাকায় গাছ পড়ে রেললাইন, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কসহ বিভিন্ন আঞ্চলিক সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। সড়ক থেকে গাছ সরানোর কাজ করছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
এ ছাড়া সড়কে বৈদ্যুতিক খুঁটি ও সঞ্চালন লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে প্রায় পুরো জেলা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
সোমবার (২৪ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১০টায় জেলার দাউদকান্দিতে গাছ ভেঙে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। মহাসড়কের ধীতপুর, হাসানপুর ও ইলিয়টগঞ্জ এলাকায় বেশ কয়েকটি গাছ ভেঙে পড়ে। এতে বন্ধ হয়ে যায় যান চলাচল। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মী ও পুলিশ সদস্যরা গাছ সরানোর কাজ শুরু করেন।
কুমিল্লা-চাঁদপুর সড়কের মুদাফফরগঞ্জ পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে গাছ ভেঙে পড়েছে। কুমিল্লা বরুড়ার আমড়াতলীতে গাছ পড়ে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। লাকসাম রেলওয়ে জংশন প্ল্যাটফর্মের আম গাছ উপড়ে রেললাইনের ওপর পড়েছে।
নগরীর ফৌজদারি গণপূর্ত ভবনের সামনে রাস্তায় গাছ পড়ে আহত একজনকে উদ্ধার করেছেন স্থানীয়রা। নগরীর ১৭ নং ওয়ার্ডের ২য় মুরাদপুর গোবিন্দ পুকুরপাড় এলাকায় ঘরের চাল উড়ে বৈদ্যুতিক তারের ওপরে ঝুলে আছে। সদরের আমড়াতলীত জামবাড়িতে ঝড়ের তাণ্ডবে গাছ পড়ে বিদ্যুতের মেইন লাইন বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। নাঙ্গলকোটের মাহিনীতে গাছ পড়ে ভেঙেছে রাইস মিলের ছাউনি, কবরস্থানের দেয়াল ভেঙে পড়াসহ ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
লালমাই উপজেলার বাগমারা দক্ষিণ ইউনিয়নের আশকামতা গ্রামে ঘরের ওপর গাছ ভেঙে পড়ে এক পরিবারের চারজন আহত হয়েছেন।
এছাড়া জেলার বিভিন্ন উপজেলার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে। ঝড়ের কারণে জাতীয় গ্রিড থেকে সরবরাহ বন্ধ। কুমিল্লা শহরেও বিদ্যুৎ নেই।
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাব মোকাবিলায় জেলা প্রশাসন নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খুলেছে। এ বিষয়ে সার্বক্ষণিক যোগাযোগর জন্য জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আবেদ আলী, মোবাইল নম্বর ০১৭১১-২০০৩৯৩; অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেনসহ (০১৭৩৩-৩৫৪৯০২) অন্য কর্মকর্তাদের সার্বক্ষণিক দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান জানান, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাব মোকাবিলায় জেলা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে। খবর পাওয়া মাত্রই সড়কে পড়ে থাকা গাছ সরানোর হচ্ছে, অন্যান্য বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত করা হচ্ছে। ১০ টন করে চাল পাঠানো হচ্ছে প্রতি উপজেলায়।
Leave a Reply