হবিগঞ্জ প্রতিনিধি:হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ব্যবসায় পুঁজি খাটিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন অনেক বাঁশ-বেতের সামগ্রী দিয়ে। এখন প্লাস্টিকের বিভিন্ন সামগ্রী পর্যাপ্ত পাওয়ায় এখন বাঁশ ও বেতের সামগ্রী দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। উপজেলার সংলগ্ন দূর্গাপুর গ্রামের অধিকাংশ লোকই বাঁশ-বেতের টুকরি, চাটাই, খলই, টাইল ইত্যাদি সামগ্রী বানিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। এ গ্রামে প্রবেশ করলেই দেখা যেত কয়েকটি পরিবার বাদে ছেলে-বুড়ো থেকে শুরু করে কিশোরী-গৃহিণীরা সবাই ব্যস্ত বাঁশ ও বেতের তৈরি বিভিন্ন সাংসারিক সরঞ্জাম ও তৈজসপত্র তৈরিতে।
খোঁজ নিয়ে ও সরেজমিনে গিয়ে জানা গেলো আরো চমকপ্রদ তথ্য। একসময় এই গ্রামের বাঁশ-বেত তৈরির কাজ ছিল আরো ব্যাপকহারে। জড়িত ছিলেন আরো বেশি মানুষ। কালের আবর্তে ও কাঁচামালের দুঃষ্প্রাপ্যতা আর প্রযুক্তির উৎকর্ষে কিছুটা থেমে গেছে এ শিল্পের গতি। কমে গেছে এ পেশায় থাকা মানুষের সংখ্যাও। কথা হয় গ্রামের একজন বাশঁ-বেতের সামগ্রী তৈরির কারিগর সুরেন্দ্র সরকার তিনি জানান, গ্রামের কমবেশি সবাই এ কাজ করেন। কিন্তু ইদানীংকালে বেশিরভাগ মানুষ এই পেশা থেকে সরে আসতে চাইছে। তবে বাপ-দাদার এ কাজে তেমন আয় নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাঁশের পণ্য তৈরিতে কাঁচামাল সংকটের কারণেও অনেকে এ কাজে আগ্রহ দেখান না।
তবে বেশিরভাগই প্রয়োজনে ও অবসর সময়ে এ কাজ করেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মাধবপুর উপজেলার দিঘীরপাড়, সম্বদপুর, হরষপুর, শাহজাহানপুর ইত্যাদি গ্রামের পরিবার এই শিল্পের সাথে জড়িত। তবে এখন বেশিরভাগ শিল্পীর এ কাজের প্রতি অনীহা দেখা দিয়েছে। বাঁশবেত শিল্পের অন্যতম উপাদানগুলোর মধ্যে রয়েছে কুকা, ডাম, হুড়া, টুকরি, ডরি, খলই, আইচা, উপা, কোপা। গ্রাম বাংলার মানুষের সাংসারিক কাজের বেশিরভাগ জিনিসই এই শিল্পের মাধ্যমে চাহিদা মিটিয়ে আসছে। সেই সাথে মাছ শিকারে যেসব যন্ত্রপাতি প্রয়োজন হয় তার অনেকটাই বানানো হয় এই বাশবেত শিল্পের মাধ্যমে।
গ্রামে গ্রামে ঘুরে এসব জিনিস সংগ্রহ করে পাইকারদের কাছে বিক্রি করেন সুরেন্দ্র সরকার। তিনি আক্ষেপের সুরে বলেন, প্লাস্টিকের জিনিস আইয়া আমরারে মারিলাইছে, যারার কাছ থাকি কিনি তারাও লাভ পায় না আমরা পাই না। কুনোমতে সংসার লইয়া আছি।
Leave a Reply