হবিগঞ্জ প্রতিনিধি:তীব্র দাবদাহের সঙ্গে তাল মিলিয়ে হবিগঞ্জ শহরবাসীকে ভোগাচ্ছে বিদ্যুৎ-বিভ্রাট। প্রচণ্ড গরমে মাঝরাতে থাকছে না বিদ্যুৎ। এতে বেশি কষ্ট পাচ্ছে শিশু-বৃদ্ধরা। বিদ্যুতের যাওয়া-আসায় নষ্ট হচ্ছে ফ্রিজ, টিভিসহ নানান যন্ত্র।
অতিষ্ঠ পৌরবাসী এই ভোগান্তির জন্য বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) অব্যবস্থাপনাকে দায়ী করছেন। তবে কর্তৃপক্ষ বলছে, সঞ্চালন লাইনে ত্রুটির কারণে বিঘ্নিত হচ্ছে বিদ্যুৎ সরবরাহ।
চৈত্রের শুরু থেকেই হবিগঞ্জের ওপর দিয়ে দাবদাহ বয়ে যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার সামান্য বৃষ্টি হলেও কমেনি গরমের তীব্রতা। শ্রীমঙ্গল আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, গরমের এই তীব্রতা থাকবে আরও কয়েকদিন।
পৌরবাসীর অভিযোগ, মাঝরাতে বিদ্যুৎ চলে যায়। তখন তীব্র গরমে ঘুম ভাঙে সবার। স্বস্তি পেতে ঘর থেকে বেরিয়ে পড়েন পুরুষ সদস্যরা। কিন্তু ভ্যাপসা গরমে চরম কষ্ট পোহাতে হয় নারী, শিশু ও বৃদ্ধদের।
হবিগঞ্জ শহরের চৌধুরীবাজার এলাকার মঈনুল হক বলেন, ‘গত কয়েকদিন ধরে খুব গরম পড়েছে। এর মধ্যে হঠাৎ চলে যায় বিদ্যুৎ। মাঝেমধ্যে দীর্ঘ সময় পার হলেও বিদ্যুতের দেখা মেলে না। এতে চরম কষ্ট পোহাতে হয় আমাদের। বিদ্যুৎ অফিসে বারবার ফোন দিলেও কেউ কল রিসিভ করে না।’
বানিয়াচং উপজেলার ব্যাংক কর্মকর্তা আব্দুল হাকিম হবিগঞ্জ শহরের রাজনগর এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে পরিবারসহ বসবাস করেন। তিনি বলেন, ‘শুক্রবার রাত ১টার দিকে হঠাৎ বিদ্যুৎ চলে যায়। পরিবারের সবাই গরমের কারণে ঘুম থেকে উঠে পড়ে। কান্না শুরু করে আমার ৪ বছরের ছেলে। কিন্তু বিদ্যুৎ আসার কোনো লক্ষণ নেই। প্রায় ২ ঘণ্টা পর বিদ্যুৎ আসে।’
ব্যবসায়ী সুব্রত বণিক বলেন, ‘মিনিটে মিনিটে বিদ্যুৎ আসা যাওয়া করে। যে কারণে কষ্টের পাশাপাশি নষ্ট হচ্ছে অনেক মূল্যবান যন্ত্রাংশও। দীর্ঘদিনের এই বিদ্যুৎ সমস্যা কবে নাগাদ সমাধান হবে কে জানে?’
হবিগঞ্জ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) থেকে বারবারই বলা হয়, বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের সমস্যার কারণে এ সমস্যায় পড়তে হয় শহরবাসীকে। যদিও প্রতি শনিবারই লাইন রক্ষণাবেক্ষণ কাজ করা হয়। তখন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত শহর ও আশপাশ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকে।
এর ব্যতিক্রম হয়নি শনিবারও। আগের দিন (শুক্রবার) ঘোষণা দিয়ে শনিবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত হবিগঞ্জ শহর ও আশপাশের এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখে পিডিবি। তাদের দাবি, লাইন রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামত কাজের জন্য সংযোগ দেয়া হয়নি।
বিদ্যুৎ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল মজিদ বলেন, ‘শাহজীবাজার বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৩৩ কেভি লাইনে সমস্যার কারণে বিদ্যুতের এই সমস্যা হচ্ছে। বিদ্যুৎকেন্দ্রের কন্ট্রোল রুমের সার্কিট বারবার পুড়ে যায়। কখনো কখনো জাম্পাট ছুটে যায়। যে কারণে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। সরবরাহ নিশ্চিত করতে পিডিবির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আন্তরিক রয়েছেন।’
Leave a Reply