নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম অহিদুজ্জামানের বিরুদ্ধে শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে গত বছরের এপ্রিলে বিশ্ববিদ্যালয়টির সব ধরণের নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের নিয়োগ স্থগিতাদেশের কারণে ১৯ মাস ধরে কোনো প্রকার নিয়োগ দিতে পারছে না বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক আরোপিত সেই নিয়োগ স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে আজ বৃহস্পতিবার (১০ডিসেম্বর) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে দ্বিতীয় দিনের মত অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে শিক্ষক সমিতি। শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মজনুর রহমানের সঞ্চালনায় কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন বিভিন্ন অনুষদের ডিন, হল প্রভোস্ট, বিভাগের চেয়ারম্যান এবং শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. নেওয়াজ মোহাম্মদ বাহাদুর। এর আগে গতকাল বুধবার (৯ ডিসেম্বর) একই দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে শিক্ষক সমিতি।
অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তারা অনতিবিলম্বে নিয়োগ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতি জোর দাবি জানিয়ে বলেন, গত ১৯ মাস ধরে সব ধরণের নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে। ফলে অস্থায়ী পদে নিয়োগপ্রাপ্ত ৬০ জন শিক্ষকসহ কর্মকর্তা-কর্মচারী চাকরি স্থায়ীকরণ বন্ধ রয়েছে। এরইমধ্যে অনেক শিক্ষকের পরবর্তী পদে পদোন্নতির সময়ও প্রায় ১ বছর অতিক্রান্ত হয়েছে। তাদের পরে স্থায়ী পদে নিযুক্ত শিক্ষকগণও পদোন্নতি পেয়ে গেছেন। ফলে শিক্ষকদের মাঝে একধরণের বৈষম্য দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেকগুলো বিভাগেই পর্যাপ্ত শিক্ষক নেই, মাত্র ২ জন শিক্ষক দিয়েও ২টি শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম চলছে। ফলে শিক্ষার মান ক্রমাগত খারাপ হচ্ছে এবং শিক্ষার্থীরা অবহেলিত হচ্ছে।
বক্তারা আরো বলেন, আমরা শিক্ষা কার্যক্রমে ফিরতে আগ্রহী কিন্তু চাকরিজীবন অনিশ্চিত রেখে এবং তীব্র শিক্ষক সংকটসহ সুষ্ঠু শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে না আনা পর্যন্ত নিয়মিত শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা অসম্ভব। আমরা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি যাতে অতি দ্রুত এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিয়োগ স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে গত ১ অক্টোবর থেকে ধরে অনলাইন ক্লাস থেকে বিরত আছেন শিক্ষকরা। বিষয়টির সমাধান না হওয়ায় কোনো মতেই শিক্ষকদের ক্লাসে ফেরাতে পারছেন না বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. দিদার-উল-আলম। তবে, স্নাতক শেষ বর্ষের ৫ বিভাগের শেষ সেমিস্টার এবং মাস্টার্সের ১ বিভাগের শেষ সেমিস্টারের শিক্ষার্থীদের অনিশ্চিত ভবিষ্যতের কথা বিবেচনায় এনে তাদের পরীক্ষা কার্যক্রমকে চলমান আন্দোলনের আওতামুক্ত রেখেছে শিক্ষক সমিতি।
Leave a Reply