1. iamparves@gmail.com : admin :
  2. najmulhasan7741@gmail.com : Najmul Hasan : Najmul Hasan
  3. janathatv19@gmail.com : Shohag Khan : Shohag Khan
শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ০৬:৩১ অপরাহ্ন

স্বেচ্ছায় বৃদ্ধাশ্রমে যেতে চাই

রোকসানা সুইটি
  • প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০২০
ফাস্টবিডিনিউজ পড়তে ক্লিক করুন WWW.FIRSTBDNEWS.COM

মানুষের জীবনে কিছু সম্পর্ক হয় আত্মার, কিছু সম্পর্ক আত্মীয়র। একমাত্র মায়ের সঙ্গেই নাড়ির সম্পর্ক। এই সম্পর্ক অস্বীকার করা যায় না। মা-বাবার সম্পর্কের কাছে সব সম্পর্কই মূল্যহীন।

ছেলে আমার মস্ত বড় মস্ত অফিসার…!/ আমার ঠিকানা তাই বৃদ্ধাশ্রম…! —নচিকেতার এ গানটা যারা মন দিয়ে শুনেছেন, তাদের সবারই পছন্দের তালিকায় গানটা আছে।

বৃদ্ধাশ্রম হলো মূলত বৃদ্ধ নারী-পুরুষের আবাসস্থল। ‘বৃদ্ধাশ্রমকে অনেক সময় ইংরেজিতে ‘ওল্ড পিপলস হোম’ বা ‘অল্ড এজ হোম’ বলা হয়, যদিও ‘বৃদ্ধদের বাসস্থান’ বোঝানো হয়। এটি হচ্ছে বয়স্কদের আবাসন ব্যবস্থা।

দু-এক দশক আগেও আমাদের দেশে বৃদ্ধাশ্রম তেমন একটা ছিল না। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এর সংখ্যা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। যে বাবা-মা তাদের সন্তানদের মানুষ করার জন্য জীবনের সবটুকু সময় তাদের পেছনে ব্যয় করে দেন, সেই বাবা-মায়ের শেষ সময়টা কেন বৃদ্ধাশ্রমে ঠাঁই হয়! কেনই বা তাদের সন্তানদের ঘরে বা নিজের ঘরেই তাদের স্থান হয় না! আধুনিক সভ্যতা কী মানুষের আবেগ-অনুভূতিগুলোকে বিকৃত রুচিবোধের সৃষ্টি করছে?

বর্তমানে আধুনিক জীবনযাপন করতে গিয়ে অনেক সন্তানই তাদের বাবা-মাকে বৃদ্ধাশ্রমে দিয়ে আসছেন। এ যেন আধুনিকতার নামে আরেকটি কলঙ্কিত অধ্যায়ের সূচনার সৃষ্টি করছে। সন্তান ব্যস্ততার অজুহাত দেখিয়ে অথবা অন্য যে কোনো কারণ দেখিয়ে বাবা-মাকে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আসেন, সেখানেই তারা ভালো থাকবেন—এটাই তাদের ধারণা। আসলেই কী তারা সেখানে ভালো থাকেন?

বর্তমানে বিভিন্ন মিডিয়াতে প্রকাশিত হচ্ছে বৃদ্ধাশ্রম থেকে তাদের লেখা চিঠি এবং সাক্ষাত্কার। এসব দেখার পরও যদি আমাদের বিবেক সাড়া না দেয়, তবে ধরে নিতে হবে আমরা মানুষ হতে পারিনি। পশুর সঙ্গে তুলনা করাও পাপ হবে। কারণ, পশুদের মাঝেও এমনটি নেই। একবার বাবা-মায়ের জায়গায় নিজেকে কল্পনা করে দেখলে কেমন হয়?

আমাদের ছোটবেলা তারা যেভাবে আমাদের নিরলসভাবে পরিশ্রম করে বড় করেছেন, তারাও তো বৃদ্ধ বয়সে আবার ছোট হয়ে যান। তাদের কর্মক্ষমতা আর থাকে না। আমাদের কি তাদের সেবা করা উচিত নয়?

সব ধর্মেই বাবা-মাকে সর্বোত্তম মর্যাদার আসনে বসানো হয়। কিন্তু বাস্তবে তার প্রয়োগ কতটুকু হচ্ছে? বৃদ্ধাশ্রমগুলোতে গরিব-অশিক্ষিত মানুষের চেয়ে উচ্চবিত্ত ও শিক্ষিত মানুষের বেশির ভাগ বাবা-মায়েরা কেন?

তবে কি তারা তাদের শিক্ষিত করেছেন, মানুষ করতে পারেননি? একদিন মজা করে এক বান্ধবীকে বলেছিলাম, জানিস, আমি চারটা বেবি নেব। সে আমার কথায় অবাক হয়ে জানতে চাইল আমার এই আজব শখের কারণ কী? আমি বললাম ছয় চেয়ারের একটা ডাইনিং টেবিল পুরা থাকবে। কিছুদিন আগে তার সঙ্গে দেখা হওয়ার পর সে বলল কী রে! আর দুইটা বেবি কই? আমি বললাম, তাদের বউদের জন্য জায়গা রেখেছি। এখন ভাবছি তাদেরও তো সন্তান হবে তাদের জায়গা করে দিতে তখন আমাদের ঠিকানা হবে হয়তো বৃদ্ধাশ্রম। কারণ বিশাল ফ্ল্যাটে জায়গা যে অনেক কমে যাবে তখন!

সবাই বলে বাবা-মাকে ভালোবাসতে দিবসের দরকার হবে কেন? আমি বলব কারো কারো জন্য দরকার আছে। কারণ…বছরের ঐ একটা দিন অনন্ত তারা বাবা-মায়ের কাছে আসবে, সেলফি তোলার জন্য হলেও তো আসবে! তবুও তো মা-বাবা কিছু সময়ের জন্য তার সন্তানকে কাছে পাবে। এটাও তো অনেক বড় পাওয়া বাবা-মায়ের জন্য বর্তমান সময়ে। তারা তো জানে, সন্তানরা এখন অনেক ব্যস্ত।

কেউই জানে না শেষ বয়সে কী হবে! তবে আমি ব্যক্তিগতভাবে তাদের কাছ থেকে কিছু আশা করব না। আশা করা ছাড়া ভালো কিছু পেলে তার আনন্দ থাকে সীমাহীন। তবে আশা করে না পেলে হতাশ হতে হয় কয়েক গুণ বেশি। বৃদ্ধ বয়স পর্যন্ত আল্লাহ আমাকে হায়াত দিলে যদি দেখি তাদের বোঝা হয়ে গেছি অথবা অবহেলার পাত্র হয়ে গেছি, তবে তাদের কিছুই বলব না। দোয়া করব তাদের জন্য আর বলব…

আমি নিজের ইচ্ছায় বৃদ্ধাশ্রমে যেতে চাই।

লেখক :সাবেক শিক্ষার্থী,

নোয়াখালী সরকারি মহিলা কলেজ

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

নামাজের সময়সূচী

  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৪:২৫
  • ১২:২৮
  • ৫:০২
  • ৭:০৭
  • ৮:৩০
  • ৫:৪৬