1. iamparves@gmail.com : admin :
  2. najmulhasan7741@gmail.com : Najmul Hasan : Najmul Hasan
  3. janathatv19@gmail.com : Shohag Khan : Shohag Khan
শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ০৬:২১ অপরাহ্ন

প্রযুক্তি কেড়ে নিচ্ছে মায়ের মমতা

রোকসানা সুইটি
  • প্রকাশের সময় : রবিবার, ৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২১

আমরা বলে থাকি, বিজ্ঞান মানুষকে দিয়েছে ‘বেগ’ আর কেড়ে নিয়েছে ‘আবেগ’। কথাটা আসলেই যুক্তিসংগত। বিজ্ঞান হলো সভ্যতার কাছে একধরনের আশীর্বাদস্বরূপ। আর সেই বিজ্ঞানের ফল হলো প্রযুক্তি। প্রযুক্তি সেই আশীর্বাদের সবচেয়ে বড় /বিগত কয়েক বছরের মধ্যে আমরা যেন অতি দ্রুত প্রযুক্তির ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছি অনেক বেশিই। আধুনিক যুগে যখন বিশ্বায়নের প্রভাব পৃথিবীর সর্বোচ্চ স্তর থেকে আমাদের ঘরের অন্দরমহল পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছে, তখন বিশ্বব্যাপী প্রযুক্তির ব্যাপক গুরুত্বকে অস্বীকার করা যায় না। বর্তমানে ব্যবহূত ডিভাইসগুলোর মধ্যে মোবাইল ফোনের ব্যবহার সবচেয়ে বেশি। এখন আর অপেক্ষা করতে হয় না চিঠি বা টিএনটি ফোনের জন্য। যে কোনো সংবাদ ও ছবি এখন মিনিটের মধ্যে পৌঁছে যাচ্ছে দূরদূরান্তে থাকা আপনজনের কাছে। মোবাইল ফোনে কী নেই, সেটাই চিন্তার বিষয়! বর্তমানে ফেসবুক ও মেসেঞ্জারের ব্যবহার সবার মধ্যে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়।এই প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে আমাদের সন্তানেরা যেমন যন্ত্রমানবে পরিণত হচ্ছে, ঠিক তেমনি আমরা যারা মা আছি, তারাও কেমন যেন নেশার মধ্যে ডুবে আছি। মায়ের যে মমতা সন্তানদের প্রাপ্য, তা যেন ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছে। মা-সন্তানের মাঝে যে বন্ধন, তা যেন ধীরে ধীরে বিলুপ্তির পথে এগিয়ে চলেছে! কথায় আছে, একজন মা তার সন্তানের প্রথম শিক্ষক। আগেকার দিনে মায়েরা যেমন অবসর সময়ে গল্প করতেন, তখন সন্তান মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে তা শুনত। চাঁদের সেই চরকাকাটা বুড়ি যে নেই, বর্তমান শিশুরা তা বেশ ভালো করেই জেনে গেছে অল্প সময়ে। ডিজিটাল শিশুরা এক ক্লিকেই পেয়ে যাচ্ছে তাদের পছন্দের গল্প, ছড়া, কার্টুন—সবকিছুই। মায়েদের এখন আর কষ্ট করে গল্প শোনাতে হয় না। তারাও এখন মোবাইল হাতে ব্যস্ত। কিছুদিন আগে বাস জার্নি করতে গিয়ে যা দেখলাম, তা সত্যি কষ্টদায়ক। আমার পাশের সিটে বসা তিন বছরের শিশু তার মায়ের সঙ্গে বসে আছে আর বারবার মাকে ডাকছে তার নানান রকম বায়না শুনতে। সেই মা ফোনে কথা বলতে এতটা ব্যস্ত যে সন্তানের আবদার যেন তার কানেই যাচ্ছে না। কিছুক্ষণ পর সন্তান কান্না করতে করতে ঘুমিয়ে পড়ে। মায়ের সেই মমতাভরা হাতে তখনো ফোন। সন্তানের গায়ে সেই মমতার হাতখানি ছোঁয়াতে পারেননি। কথা শেষ হওয়ার পর তিনি নেট নিয়ে ব্যস্ত তখন। সাত ঘণ্টার সেই জার্নিতে আমি কেবল তাদের দেখেই যাচ্ছিলাম। মা কী করে এতটা নিষ্ঠুর হন সেটাই ভাবছিলাম।বর্তমানে আরেকটি বিষয় চোখে পড়ে, তা হলো টিভিতে সিরিয়াল দেখার নেশা। মায়েরা এমনভাবে তা দেখতে থাকেন, যেন জাগতিক সবকিছুই ভুলে যান তখন। শিশুটি খাচ্ছে নাকি পড়ছে, সেই দিকটাতে নজর দেওয়ার সময় কই! একটা সময় ছিল যখন বাচ্চা খেতে না চাইলে মা তাকে গল্প শুনিয়ে খাওয়াতেন, কখনো বা ঘুম পাড়াতেন। অথচ এখনকার মায়েরা মোবাইলটা হাতে দিয়ে বাচ্চার পছন্দের যে কোনো কিছু চালিয়ে দেন, তাতেই তারা খুশি। খাওয়াও হচ্ছে, মাকে বিরক্তও করছে না। এখন আর ঘুম পাড়ানো মাসিপিসি আসে না গানের সুরে ঘুম পাড়াতে। সব সন্তানের কাছে তার মায়ের করা রান্না অনেক প্রিয়। তবে দুঃখজনক হলেও সত্য, আপনি বর্তমান শিশুদের কাছে জানতে চান তাদের প্রিয় খাবার কী? দেখবেন সেখানে ফাস্ট ফুডের নাম আসবে সবার আগে। এখন আর নানান রকম রান্না করার সময় তো নেই।ফোনে অর্ডার করছে আর তা চলে আসছে কয়েক মিনিটের মধ্যে। একবার চিন্তা করে দেখুন, আজ যে মা তার মমতাভরা হাতটি সন্তানের মাথায় রাখছেন না, সেই মা বৃদ্ধ বয়সে সন্তানের মমতাভরা হাতটি কি আপনি আপনার মাথায় রাখা আশা করতে পারেন? প্রকৃতির নিয়মে আমি যতটুকু আমার সন্তানের জন্য করব, ঠিক ততটুকুই আবার আমার কাছে ফিরে আসবে, এটাই তো নিয়ম। একবার চিন্তা করেই দেখুন না, কেমন লাগবে আপনার কাছে সেই সময়টাতে! মায়ের নামের সামনে থেকে মমতাময়ী শব্দটা কি তাহলে বাদ পড়ে যাবে?

লেখক :সাবেক শিক্ষার্থী, নোয়াখালী সরকারি মহিলা কলেজ

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

নামাজের সময়সূচী

  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৪:২৫
  • ১২:২৮
  • ৫:০২
  • ৭:০৭
  • ৮:৩০
  • ৫:৪৬