নেত্রকোণায় মৃত বাবার ইচ্ছে পূরণে হেলিকপ্টারে করে বউ এনেছেন ছেলে। আর এমন আয়োজন দেখতে শহরের মোক্তারপাড়া মাঠে ভিড় জমান পাড়া-প্রতিবেশীসহ উৎসুক জনতা। এরপর বাড়ি নিয়ে যান মোটরসাইকেলে চড়িয়ে। এমন এক ব্যতিক্রমী বিয়ে দেখে আনন্দিত এলাকাবাসী।
বাবা দীলিপ বাসফোর ছিলেন নেত্রকোণা জেলা সদর হাসপাতালের ডোম। ছেলে অপু বাসফোর নিজেও একজন পরিচ্ছন্নকর্মী। কিন্তু বাবার স্বপ্ন ছিল দুই ছেলের একজন বউ আনবে হেলিকপ্টারে। আজ মৃত বাবার সেই ইচ্ছাই পূরণ করলেন ছেলে।
বুধবার বিকেলে ৩টায় কুড়িগ্রাম থেকে হেলিকপ্টারটি নেত্রকোণার শহরের ঐতিহাসিক মোক্তারপাড়া মাঠে নামে। এদিকে হেলিকপ্টার থেকে বউ নামানোর দৃশ্য দেখতে ভিড় জমান আত্মীয়-স্বজনসহ এলাকাবাসী। জীবনে প্রথমবার আকাশে উড়ার দৃশ্য দেখতে দুপুর থেকেই তারা মাঠের চারপাশে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে থাকেন।
পরে হেলিকপ্টার নামতেই আবেগে আপ্লুত হন মা, বোন, ফুফুসহ আত্মীয় স্বজন এবং প্রতিবেশীরা। এর আগে গত মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৭টায় জেলা সদর হাসপাতালের কোয়াটার বাসা থেকে অপু বাসফোর বরযাত্রায় যান বাসে চড়ে। ঐদিন রাত সাড়ে ১০টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত লগ্নতে বিয়ে সম্পন্ন করেন কনের পিত্রালয় কুড়িগ্রাম সদরের পাওয়ার হাউসে।
এরপর বুধবার দুপুরে কুড়িগ্রাম স্টেডিয়াম মাঠ থেকে যাত্রা করে হেলিকপ্টারে করে বউ নিয়ে নেত্রকোণা সদরে ফেরেন। সেখান থেকে মোটরসাইকেল চালিয়ে বউ নিয়ে ঘরে ফেরেন অপু বাসফোর।
স্বজন ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, পারিবারিকভাবেই কুড়িগ্রাম জেলা সদরের ভুট্টু হরিজনের তৃতীয় কন্যা সনিতা রানীর সঙ্গে অপু বাসফোরের বিয়ের দিন ধার্য হয়। নেত্রকোণা থেকেই হেলিকপ্টারে করে বউ আনার কথা থাকলেও সম্ভব হয়নি। যে কারণে সড়ক পথে বরযাত্রায় যান অপু। পরে শ্বশুর বাড়ি এলাকা থেকে হেলিকপ্টারে চড়ে আসেন নিজ এলাকায়। মা শ্যামলী বাসফোর অসুস্থতা নিয়েও মাঠে আসেন ছেলেকে হেলিকপ্টার থেকে নামতে দেখার জন্য। একইসাথে স্বজন ও এলাকাবাসীও অনেক খুশি আকাশ পথে বউ নিয়ে বাড়ি আসায়।
অপুর বড় ভাই দীপু বাসফোর বাবার কাজটিই বেছে নিয়েছেন। অপু বাসফোর কিছুদিন বড় ভাইয়ের সঙ্গে বাবার কাজ করলেও বর্তমানে তিনি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে পরিচ্ছন্নকর্মীর চাকরি পেয়েছেন। এর পাশাপাশি পাঠশালা ব্যান্ডের সঙ্গে প্যাড বাজানোর কাজ করেন।
এ বিষয়ে অপু বাসফোর জানান তার অনুভূতি বলে বুঝাতে পারবেন না। তবে তার বাবার ইচ্ছা তিনি পূরণ করেছেন। এভাবে আসতে পেরে কনেও অনেক আবেগাপ্লুত।
Leave a Reply