1. iamparves@gmail.com : admin :
  2. najmulhasan7741@gmail.com : Najmul Hasan : Najmul Hasan
  3. janathatv19@gmail.com : Shohag Khan : Shohag Khan
রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৯:০৩ অপরাহ্ন

নূরুল ইসলাম ছোটনের “খোকার চিঠি”

ফাস্টবিডিনিউজ ডেক্স
  • প্রকাশের সময় : শনিবার, ৩১ জুলাই, ২০২১

খোকার চিঠি ১
বাবা,
আজ বহুনি পর তোমায় লিখছি। এমনটা ভেবোনা তোমায় বহুনি পর মনে পড়েছে। মনে তো প’তিটি সময়েই পড়ে বাবা। কিš লিখতে পারিনি। সময়ের ব্যস্ততার কথা বলোনা। আমার অনেক অলস বেলা কাটে। প’ায়শই ঘুমাতে ঘুমাতে ক্লান্ত হই, খেলতে খেলতে ক্লান্ত হই, আড্ডা েিত েিত ক্লান্তহই, তোমার কথা ভাবতে ভাবতেও হারিয়ে যাই কল্পরাজ্যে। সেখানে কতোটা সময় যে পেরিয়ে যায় আমি নিজেই জানিনা। বাস্তব জগতে ফিরি আমি মায়ের কিংবা অন্য কারো ডাক বা হাতের ধাক্কায়। তোমাকে ভুলা কি এতোটাই সহজ বাবা! সূর্য তার রস ফুরিয়ে ফেলতে পারে, চাঁআমারে সাথে অভিমান করতে পারে, আকাশের তারাগুলো তারে মিটিমিটি আলো জ্বলা বন্ড করে েিত পারে, গ’হগুলো তারে নিজস্বঅক্ষে আবর্তন থামিয়ে েিত পারে, সাগরের উÐাল তরঙ্গমালা ামিয়ে নীরব হয়ে যেতে পারে, নী তার পানিকে সাগরের বুকে ভাসিয়ে না েিত পারে, খাল তার পানি নিয়ে নীর েিক না ছুটতে পারে, সূর্য পূর্ব েিক উতি হওয়া বন্ড হয়ে যেতে পারে, ই¯্রাফীল ফেরেস্তা তার শিংগায় ফুঁক েিয় মহাপ’লয় শুরু করে েিত পারে, আযরাইল আমার জান নেয়ার জন্য আমার সামনে ন্ঠায়মান হতে পারে, তোমাকে ভুলা আমার পক্ষে সম্ভব হবেনা। আযরাইলের যতো ভয়ংকর রূপ আমি খেতে থাকবো আমার চোখের সামনে, তোমার রূপ ততোই উজ্জ্বল হতে উজ্জ্বলতর হবে। কারনটা যবিলি তুমি আমার বাবা সেটা নেহাত ভুল বলা হবে। কারণ তুমি শুধু আমার বাবা নও। তুমি আমার জীবনের পথ প’র্শক, আলোর শিারী। তুমি ছিলে আমাার ঘনিষ্ট বন্ডু, শিক্ষক। তুমি ছিলে আমার আলো-ছায়ার খেলার প’তিটি ফিক্সেল সময়ের অনুভূতি। তোমায় কি করে ভুলবো বলো বাবা! তুমি ছিলে আমার শ্বাস-প্রশ্বাস, তুমি ছিলে আমার অনুভবে, তুমি ছিলে আমার মাঝে জীবন্ত এক আর্শ। তোমায় কি করে ভুলে থাকবো বাবা! ভুলে থাকতে চাইলেও যে ভুলে থাকা যাবেনা। তোমার স্মৃতি, তোমার কর্ম, তোমার গল্প, তোমার আড্ডা, কোনো কিছুই যে আমাকে ভুলে থাকতে য়েনা। েিনর পুরোটা সময় তো অবশ্যই, রাতেও তোমায় ভুলে থাকতে পারিনা বাবা। এখানে রাত কতোটা আলোক জোছনায় ছেয়ে গেলো, কতোটা ঢেকে গেলো অমবস্যায় সেটা কোনো বিষয় নয়। ঘরে বি্যুতের আলো জ্বললো নাকি ঘর অন্ডকারে ঢেকে রইলো সেটাও কোনো কারণ নয়। এখানে কুপি বাতি কিংবা হারিকেনের আলো ও কোনো কাজ করেনা। কারণ তুমি যে আমার তৃতীয় চক্ষুর অস্তিত্ব। নিশেষে বিছানায় গিয়ে যখন ুনিয়ার চোখুটো বন্ড করে ফেলি তখন জেগে উঠে তৃতীয় চক্ষু। আর সে চক্ষুর ভেতরে তুমি হাটছো, কথা বলছো, হাসছো,, আড্ড চ্ছি, আমায় উপশে ্িযঈ১৭ঈনের ক্লান্ত শরীর নিয়ে বিভোর ঘুমে ঢলে পড়বো, সকালে ঘুম ভাঙ্গবে মায়ের ডাকে। কিš্যঈ১৮ঈ তোমার সাে আমার কর্ম বন্ড নেই। ুদ্ধজনে হাসছি, খেলছি। ঘুরতে ঘুরতে অবশ্য কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছি টেরই পাইনি। কিš সেখান েেকও কি তুমি আমার কাছ েেক বিায় নিয়েছো? না বাবা, নাওনি। রাতের সুনির্ষ্টি কোনো অংশ নয়, ঘুমের গভীরতার কোনো মাপকাটি নয়, হঠাৎ করেই তুমি এসে হাজির
আমার সামনে। তোমাকে েেখই তো আমি হেসে নিয়েছি একগাল। তারপর কখনো আমার আঙ্গুল ধরে হাটতে নিয়ে গেছো, কখনো আমার মাথায় হাত বুলিয়ে ঘুম পাড়িয়ে েিচ্ছা। কখনো আবার অস্পষ্ট অনেক কিছুতেই ভাসিয়ে নিচ্ছো। যা সকাল বেলায় ঘুম থেকে
উঠে স্পষ্টত মনে করতে পারছিনা। এবার তোমাকে ভুলে গেছি কিনা বুঝতে পারছো ? তুমি আমার শয়নে, স্বপনে, কর্মে, চিন্তায়,
বিসে, সর্বত্র। তোমায় কি করে ভুলবো বলো বাবা! তবুও ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি, বেশ ক’নি পর লিখছি বলে। ক্ষমা করে ওি আমায়। তাছাড়া তোমার ঠিকানা পেতেই তো আমার অনেক নি চলে গেেেছ। মা না বললে তো আমি তোমার ঠিকানাই পেতাম না। ঠিকানা
ছাড়া কি চিঠি লিখা যায় বাবা ? যওি লিখতাম তা তোমার কাছে পাঠাতাম কিভাবে ? রাগ করোনা বাবা। আজ লিখছি। জানো বাবা ? এখন অধিক রাত। মা ঘুমিয়ে পড়েছে। আমারও পড়ার টেবিল থেকে উঠে ঘুমিয়ে পড়ার কথা ছিল। কিš ঘুমাইনি। তোমায় লিখবো
বলে। টেবিল ল্যাম্প জ¦ালিয়ে নিয়েছি যাতে মায়ের ঘুমের অসুবিধে না হয়। চতুর্কি নিরব, নিস্তব্ধ। কোথাও কোনো ব্যস্ততার ছাপ নেই। ুদ্ধএকটি হুতোম পেঁচা বসে আছে গাছের ডালে। ওরা মাঝে মধ্যে ডেকে উঠে। আর মাঝে মধ্যে শুনা যায় ঝিঁঝিঁপোকার শব্দ। ূরের জঙ্গল থেকে শিয়ালের শব্দও ভেসে আসে মাঝে মধ্যে। আজ আমার অনেক ভালো লাগছে বাবা। তোমায় লিখছি বলে। তোমায় জানিয়ে রাখি, তোমার হাতে সাজানো আমারে পারিবারিক কবরস্থানেই তোমাকে কবর ওেয়া হয়েছে। মায়ের মুখে শুনেছি, তোমার নাকি অনেক আগ থেকেই স্বপ্ন ছিল মসজিরে পাশেই যেন তোমার কবরটা হয়। সে স্বপ্ন পূরনের লক্ষ্যেও তুমি কাজ করেছো। জায়গা কেনা,
কিছু অংশ মসজিওেয়াকফ করা, জায়গায় মাটি ভরাট করা, য়োল নির্মাণ করা, সবই আগেই করে রেখেছো। আমারে পূর্ব পুরুষরে কবর অনেকটা এলোমেলো। বাড়ির সামনে, পেছনে, পুকুর পাড়ে, জঙ্গলে, বাঁশঝাড়ের পাশে, পরিত্যক্ত খালি জায়গায়,
যখন যেখানে ইচ্ছ হয়েছে েিয়ছেন। তোমার কবরটা বেশ সু›র হয়েছে বাবা। তিন পাশে আমারে কবরস্থানের য়োল আর একপাশে
মসজিরে য়োল মিশে আছে এক হয়ে। মা প’তিনিই ফজরের নামায পড়ে তোমার কবরের কাছে যায়। হাত তুলে ােয়া করে।
চোখের জল ফেলতে ফেলতে বাড়ি ফিরে। মাঝে মধ্যে আমাকেও নিয়ে যায়। তবে সব সময় নয়। চেষ্টা করে আমায় ঘরে রেখে যেতে।

খোকার চিঠি ২
নানান রকম অফার দেয় রেখে যেতে। আজ অবশ্য পারেনি। মায়ের সাথে আমিও গিয়েছিলাম তোমার কবরের পাশে। অন্য সময়ে আমি
দেখেছি মা তোমার কবরের কাছ থেকে ফিরে আসলে দু’চোখ এক্কেবারে লাল হয়ে থাকতো। সম্ভবত অনেক কাঁদে তোমার কবরের
পাশে গিয়ে। আজও কেঁদেছে। তবে বেশ নীরবে, আমি যাতে বুঝতে না পারি। মায়েরা এমনই হয় বাবা। তাদের কষ্ট সন্তানদের আঁচড়
লাগতে দেয়না। নিরবে, নিভৃতে বয়ে বেড়ায়। ভেতরে কষ্টের উত্তাল ঢেউ আর বাইরে ¯িœগ্ধ হাসি। মনের অজান্তেই চোখের কোণে জল
চলে আসলে প’শ্ন করলে হাসিমাখা মধুর উত্তর- “কই, কাঁদছি নাতো? এমনিতেই চোখের কোণে পানি চলে এসেছে খোকা। জানিস?
আজকাল প’ায়ই চোখে এমনটা হয়। ভাবছি একবার চোখের ডাক্তার দেখাবো”। তবুও বলেনা- খোকা, আজ তোর বাবার কথা বড্ড
মনে পড়ছে। তোমার কবরের উপর মা কয়েকটি দুর্বা ফুলের লতা ফেলেছিল। আজ কয়েক টুকরা লতায় ছেয়ে গেছে পুরো কবর।
প্রতিদিন নতুন নতুন দুর্বাফুল ফুটে তোমার কবরের উপর। বাহির থেকে দেখতেও বেশ সুন্দর লাগে। মা যখনই যায় তোমার কবরের
পাশে তখনই সে ফুলগুলোর উপর হাত বুলিয়ে দেয়। আজ আমিও সে ঘাসফুল গুলোর উপর হাত বুলিয়ে দিলাম। এক অন্যরকম
অনুভ‚তি অনুভব করলাম। মনে হলো এই বুঝি আমি আমার বাবার শরীরের উপর হাত বুলিয়ে দিচ্ছি পরম মমতা ভরে। তুমিও যেনো
অনুভব করতে পারছো আমার সে ছোঁয়া।
বাবা, বলতো কতোদিন আদর করা হয়না তোমায়?হাসপাতাল থেকে এনে তোমার লাশটা যখন বাড়ির উঠোনে আমাদের বকুল গাছটার
তলে রাখলো তখনো তোমার শূন্যতা বুঝিনি। নিথর একটা দেহ পড়ে আছে। আপদমস্তক ঢেকে রাখা হয়েছে একটা চাদর দিয়ে। কেউ
দেখতে চাইলে শুধুমাত্র মুখের উপরের চাদরের অংশটুকু সরিয়ে দেখানো হচ্ছে। দেখা শেষ হলে আবার ঢেকে দেওয়া হচ্ছে আমার
বাবার মায়াবী মুখখানা। তোমার মায়াবী মুখটা দেখতে দেখতে অনেকের মনের অজান্তে চোখ থেকে গড়িয়ে পড়ছে দুদ্ধচার ফোঁটা অশ’æ।
সে অশ’æ আড়াল করতে এক একজন এক এক ভূমিকায় অবতীর্ণ হচ্ছেন। অনেকে কান্নার চেষ্টা করছেন, অনেকে নিঃশব্দে কাঁদছেন,
অনেকে এমন ভারী পরিবেশের সাথে মিশে যাচ্ছেন। আর অতি আপনজন কেউ চিৎকার করে, কেউ হাউমাউ করে, কেউ গুন গুন
করে, কেউ ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছেন। সেদিনকার পরিবেশের বর্ণনা দিয়ে তোমায় শেষ করতে পারবোনা বাবা। সেদিন অনেকেই
আমার কাছে ছুটে আসছেন। আমাকে অনেকেই কোলে তুলে নিচ্ছেন, আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন, আমায় আদর করছেন
নানানভাবে। কিšদ তোমার সে স্পর্শ আমি খুঁজে পাচ্ছিলাম না কারোর মধ্যেই। আমায় নিয়ে তাদের আফসোসের সীমা নেই। তোমায়
নিয়েও করেছেন অনেকেই। আমার কানে ভেসে আসছিল তাদের মুখের কথাগুলো- আমার বয়স অনেক কম, এতো কম বয়সে মারা
গেছেন আমার বাবা। কি হবে আমার ভবিষ্যত ? কে দেখাশুনা করবে আমায় ? তোমার এতো কম বয়সে পৃথিবী ছেড়ে চলে যাওয়াটাও
অনেকের কাছে বেদনার। মহিলারা মায়া দেখাতে ব্যস্ত রয়েছে মাকে নিয়ে। মাতো সেদিন খুব জোরে চিৎকার করে কাঁদতেও পারেনি
বাবা। আমার কথাও সেদিন ভুলে গেছে মা। মূর্ছাযাচ্ছে বারবার। প’তিবেশী কয়েকজন সবসময় নিয়োজিত মায়ের সেবায়। মাথায় পানি
ঢেলে দিচ্ছে, হাত পাখা দিয়ে বাতাস করছে আর পাশাপাশি মনোবল শক্ত হওয়ার বাণী শোনাচ্ছে। অনেক সময় দাঁতে দাঁত লেগে
যাচ্ছে মায়ের। তাও খুলে দেয়ার ব্যবস্থা করছেন মহিলারা। এভাবেই বয়ে যাচ্ছে সময়। যখনই মা স্মৃতি ফিরে পাচ্ছে তখনই তোমার
কথা বলে একটা বিকট চিৎকার। আবার মূর্ছা যাওয়া, আবার সেবা।
আমায় কেউ কেউ নিয়ে যাচ্ছে তোমার কাছে। তোমার মাথার কাছে দাঁড়িয়ে বলছে আমাকে তোমার মুখটা দেখানোর জন্য। পাশে বসা
তোমার আপনজন খুব ভালো করে তোমার মুখের উপর থেকে সরিয়ে দিচ্ছেন চাদরটা। আমি দেখছি অপলক নেত্রে। তোমার নীরবতা
আমায় ভাবিয়ে তুলেছিল সেদিন। মাঝে মাঝে আমি নিজেও ছুটে যেতাম তোমার কাছে। তোমায় বাবা, বাবা বলে অহ্নুট স্বরে
ডাকতাম। তোমার নীরব মুখটায় হাত বুলিয়ে দিতাম, নাকটা আলতো করে টিপে দিতাম, চোখের পাপড়িগুলো স্পর্শ করতাম। কপালে
হাত রাখতাম। সে হাত ধীরে ধীরে চলে যেতো তোমার চুল ঘেঁষে, এক অন্যরকম সুখ-কষ্ট অনুভব করতাম একসাথে। অনেকটা
ভাবলেশহীন ছিলাম সে সময়টায়। তোমার অসাড় হাতটি ধরে হালকা ঝাঁকুনি দিতাম তুমি জেগে উঠবে বলে। তখন কেউ আমাকে বলে
কয়ে সরিয়ে নিয়ে আসতো তোমার কাছ থেকে।
জানো বাবা ? সেদিন অনেক লোক জড়ো হয়েছিল আমাদের উঠোনে। চেয়ার পেতে দেওয়া হয়েছে উঠান জুড়ে। কিছু পাকা
দাঁড়িওয়ালা মানুষ আলোচনা করছে। বিভিন্ন আত্মীয় বাড়িতে খবর পেঁদ্বছে দেওয়া হচ্ছে। যাদের কাছে সরাসরি যোগাযোগের কোনো
ব্যবস্থা নেই সেখানে মাধ্যম খোঁজে খবর পেঁদ্বছে দেওয়া হচ্ছে। আত্মীয়দের মধ্যে দূরে কে কে রয়েছেন তাদের হিসাব করা হচ্ছে।
তাদের সাথে আলোচনা করে জেনে নেওয়া হচ্ছে কত সময়ের মধ্যে তারা এসে পেঁদ্বছতে পারবেন। তারপর জানাযার সময় নির্ধারণ করা
হয়েছে । কবর খুঁড়ার জন্য চলে গেছেন কিছুলোক, দুদ্ধতিন জন চলে গেছেন বাঁশ কাটতে। বকুল গাছের তল থেকে এক সময়
তোমাকে নিয়ে যাওয়া হয় গোসল করানোর জন্য। কাপড় দিয়ে ঘেরাও করে তোমায় গোসল করানো হয়। সেখানে আমি যেতে

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

নামাজের সময়সূচী

  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৪:২৫
  • ১২:২৮
  • ৫:০২
  • ৭:০৭
  • ৮:৩০
  • ৫:৪৬